Image

দারুস সালাম জামে মাসজিদের ইতিবৃত্তান্ত
দারুস সালাম জামে মাসজিদটি ভোলা জেলাধীন ভোলা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে দক্ষিণ পৌরচরজংলাস্থ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্র্মিনাল এলাকায় এক জনবহুল ও মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। এই মাসজিদখানা ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩৬৮ হিজরী, ১৩৭১ বঙ্গাব্দে অত্র এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিপূর্বে মাসজিদখানা ভোলা জেলার দৌলতখান থানার নিয়ামতপুর গ্রামে চতলিয়া বাজারে মরহুম মোতাওয়াল্লী কামাল উদ্দিন আহাম্মদ মোস্তফা মিয়ার পূর্ব পূরুষগণের বসত বাড়ির দরজায় অবস্থিত ছিল। নদী ভাঙ্গার পর বাড়ির লোকজন পূর্ববতী স্থানের মাসজিদ ঘরটি এখানে নিয়ে আসে। বর্তমান স্থানে স্থানীয় সর্বস্তরের ধর্মপ্রান মানুষের সার্বিক সহযোগীতা, আর্থিক সহায়তা ও আন্তরিকতায় এই বাড়ির অংশিদারগণের মাসজিদের জন্য দানকৃত জমিতে মাসজিদটি স্থাপন নির্মাণ করা হয়। তথায় মাসজিদটি বয়স ছিল প্রায় ১০০ বছর, বর্তমান এলাকায় মাসজিদটির স্থাপন কালও ৫০ বছরের অধিক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে মাসজিদের উন্নয়ন কাজ ও ইবাদতের আনজাম চলতে থাকে। বর্তমানে ৩০০০ বর্গফুট জমির উপর ১৮০০ বর্গফুট আয়তনের ৪তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট মাসজিদ ঘরটির দুই তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। মাসজিদে ক্রমশই মুসুল্লী সংখ্যা বৃদ্ধির কারনে সামনের বারান্দা ও আঙ্গিনা ছাপিয়ে মুসুল্লী ছাদেও চলে যায়। রমজান মাসে মুসুল্লী সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায় এবং শুক্রবার জুমার নামাজের পূর্বে কুরআন তাফসির শুনার জন্য দুরদুরান্ত থেকে মুসুল্লীগণ আসেন। আল্লাহর রহমতে মাসজিদটি মোতওয়াল্লী এবং একটি সুদক্ষ পরিচালনা পরিষদের মাধ্যমে সুষ্টু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। মাসজিদ পরিচালনা পরিষদের ১৯ সদস্যের ‘কার্যনির্বাহী কমিটি’, ১৩ সদস্যের ‘উপদেষ্ঠামন্ডলী’ এবং ৮১ জন ‘নির্বাহী সদস্য’ একমাত্র আল্লাহর রাজি খুশীর জন্য স্বার্থহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং সাধ্যমত আর্থিক সহায়তা করছেন। মাননীয় খতিব, ইমাম সাহেব, মুয়াজ্জিন ও অন্যান্ন সবাই আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর রাহে খেদমত করে যাচ্ছেন। সম্মানিত মুসুল্লীগণ, বাস টার্মিানালস্থ বাস মালিক-শ্রমিক-যাত্রী, ব্যবসাহী, এলাকাবাসী সর্বস্তরের মানুষ এই মাসজিদের প্রতি আন্তুরিক ও নিবেদিত। 

বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাজেট-২০২৪

‘বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাজেট-২০২৪’ শিরোনামে দারুস সালাম জামে মাসজিদের কার্যক্রমসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে। এই মহৎ কাজে আপনাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য নিন্মে তা প্রদর্শন করা হলো: 

ক্রম

মাসজিদের আনুমানিক উন্নয়ণ কাজের ব্যয় বিবরণ

আনুমানিক ব্যয় (টাকা)

০১

নীচ তলার জানালায় থাই অ্যালুমিনিয়া গ্যাস স্থাপন

১,২০,০০০.০০

০২

০৩

মাসজিদের দুইপাশে দুটি নাম ফলক স্থাপন;

২০,০০০.০০

০৪

চারটি দোকানের সাইজ সমান এবং রংকাজসহ সুন্দর্য বদ্ধিকরণ

১,১০,০০০.০০

০৫

দ্বিতীয় তলার জানালায় থাই অ্যালুমিনিয়া গ্যাস স্থাপন

১,২০,০০০.০০

০৬

নীচ তলার বারান্দা উচুকরণ ও টাইলস স্থাপন

৩০,০০০.০০

০৭

মাসজিদের আঙ্গিনা উঢ়ুকরন 

৩৫,০০০.০০

০৮

এস এস পাইপের মেইন গেইট

৪০,০০০.০০

 

০৯

নিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগানো

১৫,০০০.০০

১০

লাইব্রেরি ও ইসলামিক কালচালার সেন্টার প্রতিষ্ঠা;

২৫,০০০.০০

১১

মাসজিদের দ্বিতীয় তলায় কার্পেট প্রদান

কাজ সমাপ্ত

১২

কার্পেটের ওপর ফরাস প্রদান কাজ সমাপ্ত

কাজ সমাপ্ত

১৩

দৈনন্দিন বিভিন্ন জরুরী প্রয়োজন/শ্রমিক মুজুরী/বিশেষ সম্মানি ইত্যাদি

৫০,০০০.০০

 

  উন্নয়ন ব্যয় উপ মোট

৬,৫০,০০০.০০

 

 

 

ক্রম

প্রাতিষ্ঠানিক কাজের ব্যায় বিবরণ

আনুমানিক ব্যয় (টাকা)

০১

খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমগণের সম্মানী

৬,২৩,০০০.০০

০২

বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ

৭৫,০০০.০০

০৩

বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ক্রয়

৬,০০০.০০

০৪

মাসজিদ ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার সরঞ্জামাদি

৫,০০০.০০

০৫

অজুখানা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার সরঞ্জামাদি

৬,০০০.০০

০৬

এসি সার্ভিসিং ও মেরামত

১৫,০০০.০০

০৭

বৈদ্যুতিক ফ্যান পরিবর্তন ও মেরামত ইত্যাদি

২০,০০০.০০

 

 

   প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় উপ মোট 

৭,৫০,০০০.০০

 

 উন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক মোট ব্যয়

১৪,০০,০০০.০০

 

 

 

ক্রম

মাসজিদের আনুমানিক আয়ের বিবরণ

আনুমানিক ব্যয় (টাকা)

০১

মাসজিদের দোকান ভাড়া

১০৮,০০০.০০

০২

জুম্মার দিন দান বাক্স হতে প্রাপ্ত অনুদান

২,০৮,০০০.০০

০৩

আসর ও মাগরিব দান বাক্স হতে প্রাপ্ত অনুদান

১,০৯,৫০০.০০

০৪

মাসজিদ ঘরের বাহিরে অবস্থিত দান বাক্স হতে প্রাপ্ত অনুদান

৩৫,০০০.০০

০৫

মুসুল্লীগন হতে প্রাপ্ত মাসিক চাঁদা

২,০০,০০০.০০

০৬

    উন্নয়ন কাজে বিশেষ অনুদান

২,২২,৬৪০.০০

০৭

টাওয়ার ভাড়া

৭৫,০০০.০০

 

মোট

৯,৫৮,১৪০.০০

০৮

ঘাটতি

৪,৪১,৮৬০.০০

 

মোট আয় অনুমানিক

১৪,০০,০০.০০

...
মোতাওয়াল্লী ও সভাপতরি বক্তব্য

আস্সালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহ্মাতুল্লাহ, 

দারুস সালাম জামে মাসজিদ পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোনআনের সুরা তওবায় ১৮ আয়াতে এরশাদ করেন “প্রকৃত পক্ষে মাসজিদের রক্ষক হইবে যারা, ইমান রাখে আল্লাহর উপর ও পরকালের প্রতি এবং করে নামাজ কায়েম ও প্রদান করে যাকাত এবং কাকেও ভয় করে না আল্লাহ ছাড়া, তাদেরই হেদায়েত প্রাপ্তির আশা রহিয়াছে”। পবিত্র হাদীস শরীফে বর্ণিত “যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে মাসজিদ তৈরির কাজে শরীক হবে, আল্লাহ্ তা’আলা সে অনুপাতে বেহ্শেতের মধ্যে তার জন্য ইমারত তৈরি করবেন”। আমরা নিশ্চয়ই হেদায়েত প্রাপ্তি এবং বেহেশত লাভের আশায় মাসজিদে যেমন ইবাদত বন্দেগী করি, তেমনি মাসজিদ রক্ষনাবেক্ষন ও উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা করি।

মাশআল্লাহ মাসজিদে মুসুল্লী সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে, জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বারান্দা ও আঙ্গিনা ভরে মুসুল্লীদের ছাদেও নামাজ আদায় করতে হয়। এ কারণে মাসজিদের তিন তলার নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এবং নীচতলায় মাঝখানের দেয়ালগুলো অপসারন করে সুন্দর্য বর্ধনসহ উন্নয়ন কাজ শিঘ্রই শুরু করা হবে, ইনশাআল্লাহ। এসকল উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। সাধারনত এলাকাবাসী, ব্যবসাহী, বাস মালিক-শ্রমিক-যাত্রী, মাসজিদ কমিটির সদস্য, সমাজের বৃত্তবান ও ধর্মপ্রান সর্বসাধারনের অংশ গ্রহণের মাধ্যমেই এই অর্থের যোগান হয়ে থাকে। এছাড়াও মাসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনগণের মাসিক ভাতা, মাসজিদ গৃহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, অজু-পানির ব্যবস্থা, মাইক সাউন্ড সিস্টেম সচল রাখা, বাতি-বাতাসের ব্যবস্থ্যা রাখা, বৈদ্যুতিক বিল ইত্যাদি আনুসাংগিক কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে প্রতি মাসে প্রায় ২৫/৩০ হাজার টাকার প্রয়োজন। দৈনন্দিন এই কাজগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন করে মুসুল্লীগণের ইবাদতের সুযোগ ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। একমাত্র আল্লাহ’র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে মাসজিদের উন্নয়ন তহবিলে সাধ্যমত দান, দৈনন্দিন আনুসাংগিক কাজগুলো সম্পাদনের জন্য নিয়মিত মাসিক চাঁদা প্রদানের জন্য সম্মানিত সকলকে আহŸান এবং অন্যকে মাসজিদে দান করতে উদ্বুদ্ধ করতে অনুরোধ জানাচ্ছি।

বিনায়াবনত-মোতাওয়াল্লী ও সম্পাদক, দারুস সালাম জামে মাসজিদ পরিচালনা পরিষদ, ভোলা।

২০২৪@ কারিগরি সহযোগিতায় ষ্পাইডার আইটি লিমিটেড সর্বসত্ত্ব দারুস সালাম জামে মাসজিদ ।